গ্রন্থ বিবরণ
শঙ্খ ঘোষ প্রথাগত কোনো আত্মকথা লেখেন নি, তাঁর স্মৃতির টুকরো ভেসে আছে নানা বইয়ে। ‘এখন সব অলীক’ থেকে ‘নিরহং শিল্পী’ — এমনই নানা বইয়ে ছড়িয়ে থাকা প্রবন্ধগুলিতে খুঁজে পেয়েছি স্মৃতির সেই অবিরল যাওয়া-আসা। “পুরোনো চিঠির ঝাঁপি” বইটি তার সঙ্গে স্বরে আলাদা, কিন্তু মূলসুরে নয়। এই বই শঙ্খ ঘোষের কাছে নানা সময়ে আসা চিঠির এক সংকলন। কবি সেই চিঠিগুলিকে সাজিয়েছেন যাঁর থেকে চিঠি পেয়েছেন তাঁকে কেন্দ্র করে, এক একটি প্রবন্ধে নানা সময়ে আসা চিঠিগুলিকে সাজিয়েছেন নানা ভাবে। কখনো সময়ক্রম অনুসারে, প্রাপ্তির তারিখ হিসেবে। আবার কখনো তা বিপরীত ক্রমানুসারে। চিঠিগুলির সঙ্গে কোনো টীকা দেন নি তিনি, প্রতিটি লেখার শুরু থেকে শেষ অবধি একটির পর আরেকটি চিঠি দিয়ে বুনে দিয়েছেন একটি লেখার মধ্যে। মাঝে সেই চিঠির সম্পর্কে, চিঠি প্রেরকের সম্পর্কে লিখেছেন কিছু কথা, আর লেখাগুলি তাই বিনা টীকাতেই হয়ে উঠেছে প্রাসঙ্গিক।
সূচনাকথাতে তিনি জানিয়েছেন, “এখন আর আমাদের চিঠি পাবার দিন নেই। দিনের শেষে ডাকবাক্স খুলে দেখবার রোমাঞ্চ আর নেই। খবর দেওয়া-নেওয়ার দ্রুত-লভ্য আর তেমনই দ্রুত-বিলীয়মান অনেক পদ্ধতি নিত্যই এসে পৌঁছচ্ছে আমাদের হাতে, খবর আসে খবর মিলিয়ে যায়। কিন্তু চিঠি তো শুধু খবর নয়। পুরোনো চিঠির ঝাঁপি যদি খোলা যায় হঠাৎ, তাহলে কত-না কালস্মৃতি ভেসে আসে তার চরির্থতা অচরিতার্থতা নিয়ে, তার সুখবোধ বা বেদনাবোধ নিয়ে!
কিন্তু সে তো নিছক ব্যক্তিগত, নিজস্ব, অভন্ত্যরীণ কথা। ঠিকই, তবু হয়তো সেইটুকু মাত্রই নয়। অনেক সময়ে সেখানে ব্যক্তিগত সূত্রেই ব্যক্তিনিরপেক্ষ কিছু পরিপার্শ্বও থেকে যেতে পারে, থেকে যেতে পারে অন্য কোনো কোনো মানুষজনের চরিত্রাভাস বা চরিত্রদ্যুতি। কিছুটা দ্বিধান্বিত ভাবেই, সেইসব জমে-থাকা পুরোনো চিঠি থেকে খানিকটা অংশ প্রকাশ করতে হলো এখানে।”
এই বইয়ের কাছে প্রাপ্তি অনেক, সে শুধু দু’হাত ভরে নেওয়ার নয়, এই চিঠির প্রসঙ্গগুলি অন্তস্থ করার। তাহলেই এই বইটি হয়ে উঠবে আরো কাছের, নিজস্ব এক সম্পদ।
একুশ শতক থেকে প্রকাশিত লেখকের অন্যান্য গ্রন্থগুলি হলো পুরোনো চিঠির ঝাঁপি ( দ্বিতীয় খন্ড ) এবং বটপাকুড়ের ফেনা
বইটি পড়ুন এবং “পাঠক পর্যালোচনা” অংশে গিয়ে রিভিউ দিন। আমরা আপনাদের রিভিউ আমাদের ব্লগ “একুশের আড্ডা” এবং আমাদের Facebook, Twitter, Linkedin এবং Instagram এ প্রকাশ করবো।
Reviews
There are no reviews yet.